মেহনতি ওয়েবডেস্কঃ অবিলম্বে রাজ্যজুড়ে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে কলকাতা কলেজস্ট্রিট চত্ত্বরে পথে নামে বিভিন্ন গণসংগঠন। স্কুল কলেজ খোলার দাবির পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে অধিকার আন্দোলনে পুলিশি আক্রমন, ডিএম আইন সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা, গরীব শ্রমজীবী মানুষের উপর বিধিনিষেধের নামে নামিয়ে আনা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে। মিছিল করার কর্মসূচি থাকলেও বাধা দেয় কলকাতা পুলিশ। এর আগেও সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে নেওয়া উদ্যোগকে কেন্দ্র করে জয়েন্ট সিপি হেডকোয়ার্টার থেকে মেইল মারফত ডিএম আইনে মামলার হুমকি দেওয়া হয়। এদিনও বাধা সত্ত্বেও প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে চলে পথসভা। বক্তৃতা গানের মাধ্যমে প্রতিবাদে সামিল হন এপিডিআর দঃ ২৪ পরগনা জেলা কমিটি, আজাদ গণ মোর্চা, শ্রমিক কৃষক শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চ, এফআইআর, শ্রমিক কৃষক সংগ্রামী মঞ্চ, অধিকার, ইফটু, সিএসএ, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র সহ বিভিন্ন গণ সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ।
দেশ জুড়ে বাড়ছে শিশু শ্রম। অভাবের তাড়নায় লেখাপড়ায় ইতি টেনে স্কুল-ছুট হচ্ছে প্রচুর সংখ্যক শিক্ষার্থী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের রিপোর্ট বলছে বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৬০ কোটি শিশুর শিক্ষাজীবন এই অতিমারীর জাঁতাকলে শেষ। একদিকে প্রবল দারিদ্রতা, তারওপর লকডাউনে কাজ হারিয়ে দুবেলা খেয়ে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়ছে দেশ তথা রাজ্যের সেই বড় অংশের শ্রমজীবী মানুষের। আর অন্যদিকে বাড়ছে অপুষ্টির হার। দিনের পর দিন মিডিডে মিলের পরিমাণ কমছে। মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ের সংখ্যা বাড়ছে। ডিজিটাল পড়াশোনার সাথে পাল্লা দিতে না পেরে অকালে হারিয়ে যাচ্ছে হাজারো স্বপ্ন। ট্রাফিকিং ইন পার্সন ২০২১ এর রিপোর্ট বলছে ভারতে রমরমিয়ে চলছে শিশু পাচার, যা এই সময় কয়েকগুন বেড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে লকডাউনে বিঘ্নিত হচ্ছে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য। পাশাপাশি দেশ তথা এই রাজ্য জুড়ে চূড়ান্ত বেকারত্ব বাড়ছে। কাজ পাওয়ার পরিসর কমছে। ছাঁটাই, লকআউট বাড়ছে, তালা পড়ছে কারখানা গেটে। ন্যায্য অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ করলেই নেমে আসছে আক্রমন, মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে প্রতিবাদীদের কন্ঠরোধ করা হচ্ছে। সম্প্রতি শান্তিপুরের যে ছবি ধরা পড়েছে তাতে বিধিনিষেধের নামে চলছে পুলিশের জুলুমবাজি, তীব্র রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। আস্তে আস্তে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। এই সমস্ত কিছুর প্রতিবাদে একপ্রকার বাধ্য হয়েই লাগাতার পথে নামতে হচ্ছে বলে দাবি গণসংগঠনগুলির। কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা পেশায় শিক্ষক আলতাফ আমেদ বলেন “স্কুল কলেজ বন্ধ রেখে, পেটে খিল মেরে শ্রমজীবী মানুষকে ঘরবন্দি করে রেখে গোটা ব্যবস্থা যেদিকে যাচ্ছে তা ভয়াবহ। তারওপর চলছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। অবিলম্বে শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী সহ সমস্ত শ্রমজীবী মানুষ ও গণসংগঠনগুলির এর বিরুদ্ধে পথে নামা উচিত।”
0 Comments