ওয়েবডেস্কঃ ৩রা জুন ২০২২, অন্ধ্রপ্রদেশের আনাকাপল্লে জেলার এক ওষুধ কোম্পানিতে গ্যাস লিক করে অসুস্থ হন কমপক্ষে ২০০ জন মহিলা শ্রমিক। ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার দুপুরে। আটচুতাপুরম এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (সেজ) পোরাস ল্যাবরেটরিতে অ্যামনিয়া গ্যাস লিক হয়ে সেই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি পোশাক কারখানায়। সেইসময় কর্মরত প্রায় ২০০জন মহিলা শ্রমিক প্রবল বমি, মাথা যন্ত্রণা, চোখে মুখে জ্বালা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পোরাসের পাশে অবস্থিত ব্র্যান্ডিক্স কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন লোক কাজ করেন। ঘটনার পর, ব্র্যান্ডিক্স কারখানায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আনাকাপল্লির পুলিশ সুপার গৌতমী সালি জানিয়েছেন, "পোরাস কোম্পানির স্ক্রাবার অঞ্চলে একটি ছিদ্র থেকে পার্শ্ববর্তী ব্র্যান্ডিক্স অ্যাপারেল ইন্ডিয়াতে অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পরে।”
ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে হিউম্যান রাইটস ফোরাম- অন্ধ্রপ্রদেশ স্টেট কমিটির পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয় “ঘটনার ২৪ঘন্টা পরেও, ঠিক কোথায় এবং কীভাবে ছিদ্র হয়েছিল সে সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা নেই। এমনকি বিষাক্ত ছিদ্রটির পরিচয় এবং প্রকৃতি অস্পষ্ট রয়ে গেছে।” প্রকৃত সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ তোলেন।
প্রসঙ্গত প্রায় ১মাস আগে, গত ২৪শে এপ্রিল অন্ধ্রপ্রদেশেরই ইলুরু জেলার আক্কিরেড্ডিগুডেমে একটি ওষুধ কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যান ৬ জন শ্রমিক। কারখানায় রাতের শিফটে কাজ চলাকালীন মাঝরাতে আচমকাই আগুন লেগে যায় চার নম্বর ইউনিটে। আগুনের তেজ এতটাই বেশি ছিল যে, সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা পালাতে পারেননি। যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে চারজন পরিযায়ী শ্রমিক। সকলেই বিহার থেকে এসেছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কমপক্ষে ১৫ জন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানা যায়। পরপর গ্যাস লিক, আগুন লাগার ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়ে সমাজের বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত গাফিলতি নাকি আরো বড় কোনো ষড়যন্ত্রে অসুস্থ ও প্রাণ হারাতে হচ্ছে শ্রমিকদের তা নিয়েও উঠেছে জল্পনা। একের পর এক ঘটনায় মুখ বাঁচাতে সরকারি তরফে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলেও সেই ভূমিকাও যথেষ্ট প্রশ্নের মুখে।
0 Comments