মেহনতি.ইন— বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলিকে সংরক্ষণ করে রাখার নয়া উদ্যোগে সামিল হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বিবিধ জাতি-শিল্প-সংস্কৃতির তারতম্যের পাশাপাশি ভাষাগত বৈচিত্র্যের দেশ ভারতবর্ষে আজ দুর্ভাগ্যবশত লক্ষাধিক ভাষা অস্তিত্ব সংকটে ধুঁকছে। কেবলমাত্র ভারতে নয়, দেশ-বিদেশসহ সমগ্র পৃথিবীতে যে বিপুল পরিমাণ ভাষা বিলুপ্তির সাথে সাথে সেই ভাষাভাষী মানুষদের আত্মপরিচয়ের মৌলিক উপাদান, জীবন-জীবিকা এমনকি জন্মগত অধিকারটুকু ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছে, সেই বিপন্ন ভাষাগুলির উপর ডকুমেন্ট তৈরির মধ্য দিয়ে ২০১৪ সাল থেকে সেগুলিকে সংরক্ষণ করে আসছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্গুইস্টিক্স বিভাগ। ২০১৫-১৬ সাল থেকে ভারতবর্ষের "Endangered language" সংরক্ষণ প্রকল্পে সমগ্র ভারতের ৬টি বিশ্ব বিদ্যালয়ের মধ্যে যাদবপুরের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ্য। ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্ব ভারতের মেচ, রাভা, খোট্টা, টোডো প্রভৃতি একাধিক ভাষা ডকুমেন্টেশনের পাশাপাশি তাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নৃতাত্ত্বিক পর্যালোচনা এবং বর্তমানে প্রায় কুড়িটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সংরক্ষণে নতুনভাবে উদ্যোগ নিচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বিপন্ন ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে— শৌরা, চাক, মরু, প্লার, মেগাম, কোদা, বম, কন্দু প্রভৃতি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্গুইস্টিক্স বিভাগের ডিরেক্টর অধ্যাপক ইন্দ্রনীল দত্ত ভাষা সংরক্ষণ প্রসঙ্গে জানান— শুধু এপার বাংলা নয়, ওপার বাংলাতেও ভাষা বিলুপ্ত হচ্ছে। তাই ভাষা সংরক্ষণের মাধ্যমে পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গবেষণার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, আই. আই. টি. (খড়গপুর), এশিয়াটিক সোসাইটি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা অনস্বীকার্য বলেছেন একাধিক অধ্যাপক।
0 Comments