‘লোকসভা না বিধানসভা? সবচেয়ে বড়ো গ্রামসভা’

উদ্ভাস দাস

আজ ২২ আগস্ট, ২০২২ দেউচা পাঁচামি হরিনসিঙ্গা দেওয়ানগঞ্জ এলাকার প্রস্তাবিত খোলামুখ কয়লাখনি প্রকল্পের বিরুদ্ধে গ্রামসভার মাধ্যমে সংগঠিত হওয়া গ্রামবাসীদের মিছিল সুসম্পন্ন হলো। মিছিলে ১০-১২ কিলোমিটার হাঁটলেন প্রায় ৫০০ জন আদিবাসী, প্রচণ্ড রোদের তাপ উপেক্ষা করে। গ্রামবাসীদের দাবি, এলাকায় কয়লাখনি প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করতে হবে কারণ এতে করে জল জঙ্গল জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন প্রায় ২১০০০ মানুষ। ব্যাপক মাত্রায় ধ্বংস হবে পরিবেশ, প্রকৃতি।

খুব সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে জলের কল বসানোর জন্য বোরিং করার ভাঁওতাবাজি দিয়ে কয়লার বোরিং শুরু করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে এই কাজ যাতে নির্বিঘ্নে করা যায় পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, যে গ্রামসভার অনুমতি ছাড়া গ্রামে গ্রামে বোরিং বন্ধ করতে হবে এবং কোন আইনের আওতায় এই কাজ পুলিশ পাহারায় হচ্ছে তা গ্রামবাসীদের কাছে পরিষ্কার করতে হবে। বলাই বাহুল্য, যে গ্রামসভার অনুমতি ছাড়া এভাবে আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে পুলিশ ঢুকে কয়লার বোরিং করতে পারে না। এলাকায় বনাঞ্চল থাকা সত্ত্বেও বনাধিকার আইন ২০০৬ লাগু না করে এই ধরণের প্রকল্প সম্পূর্ণ বেআইনি। 

এছাড়াও দেউচা পাঁচামি এলাকায় স্বাধীনতার দীর্ঘ ৭৫ বছর পরেও এলাকাবাসীদের সবরকম অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। না আছে স্বাস্থ্যের অধিকার, না শিক্ষার অধিকার, না খাদ্যের অধিকার, না কাজ করে খাওয়ার অধিকার। নূন্যতম অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলেও শিশুদের খাদ্য চুরি হয়। তাই গ্রামের মানুষ মিছিল করে এই সচেতনতা তৈরি করতে চাইলেন যে তাঁরা অধিকারের লড়াইয়ে নেমেছেন। লড়াই শুধুমাত্র কয়লাখনির বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ নয়। সংবিধান স্বীকৃত যা অধিকার আছে সেগুলো সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। 

এই বৃহত্তর আন্দোলনের ডাকে এতজন মানুষের সাড়া অত্যন্ত ইতিবাচক। সর্বোপরি একটা স্লোগানে বার বার মুখরিত হচ্ছে সমগ্র দেউচা পাঁচামি:

"লোকসভা না বিধানসভা? সবচেয়ে বড়ো গ্রামসভা"

Post a Comment

0 Comments