নিকোবরের গহীন অরণ্য কেটে বন্দর ও প্রোমোদ নগরী গড়ছে মোদী সরকারঃ অনুমোদন মঞ্জুর

ছবি সৌজন্যে: Getty Image

অমিতাভ আইচ

৯৫% বৃষ্ট অরণ্যে ঢাকা সম্পেন ও নিকোবরি জনজাতির বাসস্থান ও বিপুল সংকটাপন্ন বন্যপ্রাণী যেমন নিকোবর মেগাপড, কাঁকড়া খেকো বাঁদর ও লেদার ব্যাক কচ্ছপের আবাস গ্রেটার নিকোবর ও গ্রেটার নিকোবর বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের বিরাট অংশ ও গ্যালাথিয়া বে-র পুরোটাই ধ্বংস করে ৮.৫ লক্ষ গাছ কেটে, আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর, এয়ারপোর্ট ও প্রোমোদ শহর তৈরী করছে মোদী সরকার। রাজ্যে রাজ্যে চোর ধরো জেলে ভরো অভিযান, ভোট, জোট, ঘোট সিপিএম, তৃন, রাহুলের হন্টন, খেলা, মেলা, বৃষ্টি সবকিছু নিয়ে দেশ যখন মত্ত তখন দেশের পরিবেশ ও বনমন্ত্রক আসল কাজটা সেরে ফেলেছে আর সেটা হলো নাম মাত্র কিছু রেগুলেটারি ও কমপেনসেটরি শর্ত চাপিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ৭৫ হাজার কোটি টাকার এই সাধের প্রকল্পটি যার পোশাকি নাম International Container Transhipment Terminal (ICTT) তাতে ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে। পুরো প্রকল্প শেষ হতে হয়তো ২০৫০ পেরিয়ে যাবে তবে বন্দর ২০২৭-২৮ এই শুরু হয়ে যাবে।

সরকারকে এই ভয়ানক কাজটি করতে যারা অনুপ্রেরণা ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছেন ও কি করে লেদার ব্যাক কচ্ছপ, নানান প্রকার বিপন্ন প্রজাতির পেঁচা, মাটিতে বাসা করা অতি বিপন্ন মেগাপোড, প্রবাল দ্বীপ, ম্যানগ্রোভ ও সম্পেন ও নিকোবরিরা এই ধ্বংস লিলা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে এমন নানান আজগুবি গ্রীনওয়াশ পরিকল্পনা দিয়েছেন ও প্রজেক্টের কাজে যুক্ত হয়েছেন তারা হলেন দেশের মানুষের করের টাকায় তৈরী তথাকথিত সেরা জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ সংস্থা গুলি যেমন জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া, সালিম আলি সেন্টার ফর অর্নিথোলজি এন্ড নেচারাল হিস্ট্রি বা স্যাকন। না সালিম আলি, অমলেশ চৌধুরী, আর এল বহ্মচারীরা মরে বেঁচে গেছে।  তাদের আফ্রিকার চিতা আর এসব দৃশ্য ও চামচাগিরি দেখে যেতে হয় নি।

প্রতিবাদ যে লিপিবদ্ধ হয়নি তা নয়। বিশিষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিশেষজ্ঞ জানকি আন্ধেরিয়া প্রশাসনকে চিঠি লিখে অবহিত করেছেন যে যেখানে কনটেনার টার্মিনাল বানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে সেখানে গত ১০ বছরে ৪৪৪ টা ভূমিকম্প হয়ে গেছে এবং এই সব এলাকা সবচেয়ে প্রবলতম ভূমিকম্প প্রবন ও ২০০৪ সালের সুনামি এতো প্রবাল প্রাচীর ও ম্যানগ্রোভ থাকা স্বত্তেও এখানে বিপুল ধ্বংসলিলা চালিয়ে ছিলো। কাজেই এমনই কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় গোটা প্রকল্পটাকে ধ্বংস করতে পারে এর ফলে বিপুল আর্থিক ক্ষতি শুধু হবে না সমুদ্রে ও পরিবেশে ছড়িয়ে পড়বে বিপুল খনিজ তেল ও রাসায়নিক ও ক্ষতিকারক পদার্থ যা প্রাণ ও পরিবেশের পক্ষে হবে ভয়াবহ বিপর্যয়কর।

এমন আরও কিছু  প্রতিবাদ নেটদুনিয়ায় খোঁজ করলে পাওয়া যাবে। একই সাথে নিকোবর ও আন্দামানে বসবাসকারী মুলভুখন্ডের সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণির তৈরী স্থানীয় চ্যানেল ও সংবাদ পত্রের মাধ্যমে প্রবল উন্নয়নের প্রচারও চলছে।

 তবে মুল ভুখন্ড থেকে বহু দুরে পৃথিবীর অন্যতম গভীর ও অনন্য এই বনানীর ধ্বংসের খবরে কেই বা বা আগ্রহী। কেই বা গন প্রতিরোধ গড়বে!! তবে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আজকাল সবাই তো খুব নাকি সচেতন তাই চোখ এড়িয়ে যাওয়া খবরটা আবার বলা। সবকিছু আর সবাই যেখানে বিক্রি হয়ে গেছে সেখানে সে দেশে আর কিই বা করার আছে।

নীচের ছবি সৌজন্যেঃ Mongabay.com

Post a Comment

1 Comments

  1. বিকল্পধারার লেখনীর জন্য সাধুবাদ। তবে আর্টিকেলগুলো আরো যথাযথ তথ্যবহুল হলে ভালো হয়।

    ReplyDelete
Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)