জয়নগর বকুলতলা থেকে গ্রেফতার ৪ সমাজকর্মীর শর্ত সাপেক্ষে জামিন

মেহনতি.ইন : গত রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগর বকুলতলা থানা এলাকার জীবন মণ্ডলের হাট থেকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তিনজনকে আটক করে পুলিশ। যাদের মধ্যে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তীর্থ রাজ ত্রিবেদী, পলিটেকনিক ইঞ্জিনিয়ার অ্যালফ্রেড ডিক্রুস এবং রাকেশ আলি। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধৃতদের সকলের বয়স কুড়ি থেকে তেইশের মধ্যে। এপিডিআরের পক্ষ থেকে সোমবার বকুলতলা থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হবে। অথচ তাদের ছাড়া হয়নি, উল্টে আদালতে পেশ না করে সেদিনও পুলিশ লক আপে আটক রাখা হয়। এদিন দুপুর ১টা নাগাদ ধৃতদের বাড়ির মালিক বাবলু হালদারকে নতুন করে আটক করে বকুলতলা থানায় আনা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের সকলেই "শ্রমিক কৃষক একতা মঞ্চ" নামে একটি সংগঠনের হয়ে বকুলতলা থানা (জয়নগর ২ নং ব্লক) এলাকার মায়াহাউড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা উন্নয়নের জন্য প্রচারের কাজ করছিল। কিছুদিন আগে এই সংগঠনের তরফে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে বিএমওএইচ-এর কাছে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়।  


 এই ঘটনার তথ্যানুসন্ধানে এপিডিআর, জয়নগর শাখার দুই প্রতিনিধি গতকাল বকুলতলা থানায় গেলে, ২৪ ঘন্টা পেরোলেও কেন ধৃতদের আদালতে তোলা হয়নি সে বিষয়ে জানতে চাইলে তাদেরও ৩-৪ ঘন্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। জানা গেছে, ধৃতদের পরিবারকে কোনও অ্যারেস্ট মেমোও দেওয়া হয়নি। এমনকি বন্দীদের ধরে আনার সময় পুলিশ চড় মেরেছে বলেও অভিযোগ। 


বকুলতলা থানার বেআইনি আটকের বিরুদ্ধে ও ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ এপিডিআর, দঃ ২৪ পরগণা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বারুইপুর এসপির কাছে ডেপুটেশন দিতে যাওয়া হয়। এসপি অফিসের সামনে দুপুর ২ টোয় জমায়েত করলে বিশাল ফোর্স নামিয়ে পুলিশ বাধা দেয় এবং ব্যারিকেড করে দেয়। এরপর এপিডিআরের চারজন প্রতিনিধি এসপির সাথে দেখা করে ডেপুটেশন দিতে গেলে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেন ডিআইবি (এসপি সেসময় অফিসে ছিলেন না)। কোর্টে পেশ না করে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় ধরে ধৃতদের বেআইনি আটক, এপিডিআর কর্মীদের হেনস্থা সহ সমস্ত অভিযোগ তাকে জানানো হলেও কোনোরকম সদুত্তর তার কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। 


বিকেল সাড়ে চারটের পর অবশেষে ধৃতদের বারুইপুরে আনা হয় এবং এসডিজেএম কোর্টে তোলা হয়। সিআরপিসি ১০৮ সহ মোট দুটি ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। শুনানি শেষে চারজনেরই জামিন মঞ্জুর হয়েছে। কিন্তু জামিনের শর্ত হিসেবে প্রত্যেকের ২৫০০০ টাকা এবং বকুলতলা থানার অন্তর্ভুক্ত চারটি স্থানীয় জমির দলিল (আধার কার্ড ও ছবি সহ) সিকিউরিটি হিসেবে একবছরের জন্য জমা দিতে হবে। কোর্টের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় শর্ত পূরণ সম্ভব হয়নি। চারজনকেই আজ বারুইপুর জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে।

Post a Comment

1 Comments

  1. তৃণমূল সরকারের প্রশাসন কে ধিক ধিক ধিক্কার

    ReplyDelete
Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)