কর্মসংস্থান, ভাষার স্বাধীকার, জমির পাট্টার দাবিতে এবং চা বাগানের শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদে জলপাইগুড়ি শহরে ১ নভেম্বর শয়ে শয়ে রাজবংশী এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষের বিক্ষোভ মিছিল।
কেএলও সংগঠনের সাথে যুক্ত সন্দেহে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ও ময়নাগুড়ি ব্লকের বহু মানুষকে বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে জেলবন্দী করা হয়। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পূর্বে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। সরকার গঠনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কামতাপুর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে যারা জেল খেটেছেন, সরকার তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে ধূপগুড়ি ও ময়নাগুড়ি ব্লকে প্রায় ৪৪২ জন এইরকম মানুষ আছেন, যাদের এখনও আদালতের চক্কর কাটতে হচ্ছে এবং তাদের কর্মসংস্থানের কোন ব্যবস্হাও সরকার করেনি। একই সঙ্গে রাজবংশী মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তাদের ভাষার স্বাধীকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আলাদা রাজ্যের দাবির প্রতিও এই সরকার কোন রকম কর্ণপাত করেনি । তারা অনেকদিন ধরেই বিভিন্ন স্তরে আবেদন নিবেদন, চিঠিপত্র, ডেপুটেশন ইত্যাদি করছেন, কিন্তু কোন ফল হয়নি।
অন্যদিকে চা বাগানের বহু সংখ্যক আদিবাসী শ্রমিক তাদের পিএফএর টাকার ঠিকমত হিসাব পাচ্ছেন না, কারুর ২০ হাজার, কারুর ৫০ হাজার টাকা হিসাবে গরমিল। তারা আশঙ্কা করছেন যে এই টাকা লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। সদর ব্লকের বাহাদুর অঞ্চলের ১১০টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে জমির পাট্টার দাবিতে সরব হয়েছেন। ৩৭ বছর ধরে বসত করার পরও তাদেরকে জমির মালিকানা দেওয়া হয়নি।
এইসকল বঞ্চিত মানুষেরা গত ১ নভেম্বর একত্রিত হয়ে রাজনৈতিক বন্দী মুক্তি কমিটি এবং বাহাদুর কৃষক মঞ্চের ডাকে জলপাইগুড়ি শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন। কদমতলা মোড়ে প্রায় এক ঘন্টা মতো সভা চলে, জোৎস্না রায়, সন্ধ্যা বর্মণ, স্বাধীণ রায় সহ বিভিন্ন বক্তা তাদের দাবিসমূহ শহরের নাগরিকদের সামনে তুলে ধরেন। প্রায় ৬০০ জনের মিছিল বেগুনটারী, দিনবাজার সহ প্রায় গোটা শহর পরিক্রমা করে। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা জানান যে প্রশাসন যদি তাদের দাবি ও সমস্যাগুলোর প্রতি কান না দেন, তাহলে তাঁরা পরবর্তীতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।
1 Comments
Ekdam sathik dabi. Joy jukta hok ei andolan.
ReplyDelete