ইলেক্টরাল বন্ড ইঙ্গিতমাত্র - ভারত সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে সই করতে চলেছে Pandemic Treaty


ইলেক্টরাল বন্ডের তথ্য ফাঁস হওয়া আর আকাশচুম্বী ওষুধের দাম দেখলে সাধারন মানুষকে আজ বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না যে ওষুধ কোম্পানিগুলি দেশের শাসক ও বিরোধী দলগুলিকে কিনে রেখেছে। রেমেডিসভিরের মতো ক্লিনিকাল ট্রায়াল ফেল করা মারণ ড্রাগ করোনাকালে জীবনদায়ী ওষুধ হিবেবে মুনাফা লুটেছে বহুগুণ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও তার পদাঙ্ক অনুসরণকারী দেশীয় বিশেষজ্ঞ বাহিনী গঠনমূলক বা বুনিয়াদি স্বাস্থ্য নির্মাণের পরিবর্তে শুধু সংক্রামক রোগের ভয় দেখিয়ে ভ্যাক্সিন ব্যবসা চালিয়ে সাধারন মানুষকে ফার্মা কোম্পানিদের গিনিপিগ বানাচ্ছে। বিনামূল্যে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিবর্তে সরকার আনছে চটকদার স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প যা আবার বীমা কোম্পানিদের মুনাফার পথ প্রশস্ত করছে। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাকে অপ্রাসঙ্গিক করে তোলার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যকে ব্যবহার করে জনমানুষের ওপর আক্রমণ আরও জোরদার করার পরিকল্পনা চলছে বিশ্বজুড়ে প্যান্ডেমিক ট্রিটি বলবৎ করে। 

দেশজুড়ে ভোটপুজোর বাজারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অতিমারী চুক্তি বা WHO প্যান্ডেমিক ট্রিটি নিয়ে কোন সাড়াশব্দ শোনা যাচ্ছে না যদিও ২৩শে মে থেকে ১লা জুন, ২০২৪ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মেলনে অতিমারী চুক্তিতে ভারত সই করতে চলেছে। এই অতিমারী চুক্তি তার ছত্রে ছত্রে ভারতের সার্বভৌমত্ব ও তার সংবিধান বিরোধী। এই চুক্তি একবার সই হয়ে লাগু হয়ে গেলে ভারতবর্ষে অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি করা যাবে এবং তা করার জন্য ভারতের আইন সভা বা বিচার ব্যবস্থার অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে না। “বিশ্বস্বাস্থ্য"  সংস্থার অঙ্গুলিহেলনে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলিতে স্বাস্থ্য এমারজেন্সি জারি করার মাধ্যমে লকডাউন এবং বাধ্যতামূলক টিকাকরণ বৈধতা পাবে। ফার্মা লবির টাকায় পেটমোটা সংসদীয় দলগুলি এবিষয়ে নিশ্চুপ। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলির মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতেও সব থেকে বেশী বিনিয়োগ রয়েছে ফার্মা কোম্পানিদের এবং ভ্যাক্সিন হাঙরদের। প্রস্তাবিত এই অতিমারী চুক্তি জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনে জনস্বার্থে তৈরি বলে প্রচারিত। আদতে জনস্বাস্থ্যের যে সংজ্ঞা তার সঙ্গে এই অতিমারী চুক্তির মৌলিক বিরোধ রয়েছে।

 
    • জনস্বাস্থ্যের দোহাই দিয়ে গোটা পৃথিবীর মানুষকে ইচ্ছেমতো স্বাস্থ্য নজরদারির ঘেরাটোপে বেঁধে ফেলার এক ফন্দি এই অতিমারী চুক্তি। বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য আই ডির মাধ্যমে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য পরিষেবাকে (সরকারি/বেসরকারি) WHO এর নজরদারির আওতায় আনা হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবা আর চিকিৎসা পদ্ধতির একচ্ছত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে WHO। সীমান্ত পারাপারের জন্য ভ্যাক্সিন পাসপোর্ট চালু করা অতিমারী চুক্তির অন্যতম লক্ষ্য। 

    • জনস্বাস্থ্যের ধারণা বলে যে কোন অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, রোগ, ইত্যাদির গতিপ্রকৃতি ভীষণভাবে এলাকাভিত্তিক। যে কারণে আমাদের দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে স্বাস্থ্য হল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়ের অধীন। ভারত WHO প্যান্ডেমিক ট্রিটিতে সই করলে তার অর্থ দাঁড়াবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সরাসরি অধিকার বর্তাবে ভারতের যে কোন এলাকার স্থানীয় স্বাস্থ্য পরিষেবায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করার এমনকি স্বাস্থ্যের দোহাই দিয়ে এমারজেন্সি জারি করার। এটা কেবল জনস্বাস্থ্য নয়, দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর এক ভয়ঙ্কর আক্রমণ। যে কোন জায়গায়  লকডাউন নামিয়ে এনে স্থানীয় স্কুল বন্ধ করা, খুচরো বাজার ধ্বংস করা, জবরদস্তি বাড়ি ঢুকে তল্লাসি চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারবে WHO।    

    • ন্যুরেমবার্গ ট্রায়াল প্রতিটি মানুষকে চিকিৎসা প্রত্যাখ্যান করার অধিকার দিয়েছে। WHO এর স্বাস্থ্য নজরদারি কায়েম হলে টেস্ট ফেল বা অপরীক্ষিত ওষুধ /ভ্যাক্সিন না নেওয়ার কোন অজুহাত আর সরকার শুনবে না। তার মানে দেশে বিদেশে ফার্মা কোম্পানিরা আমাদের রাইট টু লাইফ বা জীবনের অধিকার কেড়ে নিতে পারছে কত সহজে! নিম্নমানের কাশির ওষুধ খেয়ে শিশুমৃত্যু ঘটলেও সে ওষুধ বাজারে চলবে। টেস্ট ফেল বিতর্কিত চিকিৎসা পদ্ধতি গণহারে প্রয়োগের ফলে হৃদরোগ, মধুমেহ, উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতি হরেক রকম অসংক্রামক রোগ বহুগুণ বৃদ্ধি পেলে ইচ্ছেমতো কোম্পানিগুলি আবার জীবনদায়ী ওষুধের দাম বাড়িয়ে দেবে। গঠনমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে নজর দেওয়ার পরিবর্তে চলবে অগুনতি সংক্রামক রোগের ভয় দেখিয়ে অপ্রয়োজনীয় এবং বিতর্কিত সব ভ্যাক্সিনের ব্যবসা। এসমস্ত কিছুকে আইনি বৈধতা দিতে চলেছে  WHO প্যান্ডেমিক ট্রিটি। 

    • আমাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণেও WHO অগ্রণী ভূমিকা নিতে চলেছে। বিশ্বজুড়ে GM লবি, সিন্থেটিক খাবারের লবির নজর রয়েছে ভারতের কাঁচা মাছ মাংস ও সব্জির বাজারের ওপর। এক্ষেত্রেও সংক্রামক রোগের অছিলায় চাষের ক্ষেত বা গৃহপালিত এবং গবাদি পশু ধ্বংস করার  অধিকার পেতে চলেছে WHO।  
            

২৩শে মে থেকে ১লা জুন, ২০২৪ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশের সরকার আবদ্ধ হতে চলেছে এই জনবিরোধী চুক্তিতে। জনস্বাস্থ্যের দোহাই দিয়ে পুলিশ রাষ্ট্র কায়েম করার আইনি প্রক্রিয়া প্রায় সম্পূর্ণ। জাপানের মানুষ এই অতিমারী চুক্তির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের রাজ্যসভাতেও এবিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিহারের সাংসদ শ্রী অনিল প্রসাদ হেগড়ে। ভারতের এক স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল উপরোক্ত সমস্যাগুলি নিয়ে সরাসরি WHO কে চিঠি লিখেছেন। 

দল নির্বিশেষে ভোট প্রচারে আসা সমস্ত জনপ্রতিনিধিকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করুন ও সচেতন করুন। সর্বনাশা এই অতিমারী চুক্তি রুখে দিন! 

লিঙ্ক :
(১)https://fb.watch/ruhR0MY8Fw/
(২)https://www.globalresearch.ca/letter-from-india-stop-world-health-organizations-pandemic-preparedness-tyranny/5843525
(৩) https://apps.who.int/gb/inb/pdf_files/inb9/A_inb9_3-en.pdf

লেখাটি জনস্বাস্থ্য মোর্চা'র (People's Alliance for Public Health- PAPH) পক্ষ থেকে গৌরব মুখুটি কর্তৃক প্রকাশিত। 

Post a Comment

1 Comments

  1. শিক্ষিত, সচেতন, মানবদরদি মানুষের কী অভাব হল এদেশে?

    এভাবে কুবৃত্তিধারী মানুষ / প্রতিষ্ঠান এর জন্মহার কি শুধুমাত্র বেড়েই চলবে আগামীতে?

    কে আটকাবে এই সর্বনাশা উদ্যোগ?

    ReplyDelete
Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)